ঢাকা ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

আ.লীগের যারা অপরাধী নন, রাজনীতি করতে চাইলে তাদের দল ছাড়তে হবে: নাহিদ

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:১৫:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী লীগের যারা দুর্নীতি বা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নন, তাদের রাজনীতি করার প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের যারা অপরাধী নন, রাজনীতি করতে চাইলে তাদেরকে আওয়ামী লীগ ও তাদের মতাদর্শ ত্যাগ করতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নামে, আওয়ামী লীগ মতাদর্শে কোনো রাজনীতি করার সুযোগ নেই। কারণ, তাদের মতাদর্শটা ফ্যাসিবাদী, যার ভিত্তিতে গত ১৫ বছরের রাজনীতি চলেছে, গণহত্যা হয়েছে। যারা ভুল বুঝতে পারবেন, তাদেরকে সেই আদর্শটাকে ত্যাগ করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারের তো কোনো সমস্যা নেই। অন্য দলে যোগ দিতে পারেন, নতুন দল গঠন করতে পারেন।

ইংরেজি গণমাধ্যম ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা। সাক্ষাৎকারটি রোববার প্রকাশ হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে নাহিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আওয়ামী লীগের রাজনীতি চান না, কিন্তু আইসিটি আইন সংশোধনের সময় দলের বিচার করার সুযোগ রাখেননি কেন?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, তখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অংশীজনদের পরামর্শ নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উপদেষ্টা পরিষদের বিজ্ঞ সদস্যরা মতামত দিয়েছেন। এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, সেই দিকে বেশি নজর দিয়েছি আমরা। কারণ দল নিষিদ্ধ করতে আদালতের বাইরেও পথ আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আপাতত বিচার কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে আছি। বিচারের অগ্রগতি হলে এ সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও সহজ হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের গত ছয় মাসের কাজের মূল্যায়ন করতে গিয়ে নাহিদ বলেন, কিছু আক্ষেপের জায়গা রয়েছে, এটা ঠিক। গত ছয় মাসে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রত্যাশিত মাত্রায় উন্নতি করতে পারিনি। তবে পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমি মনে করি, সবচেয়ে বড় অর্জন হলো, অনিশ্চয়তা থেকে স্থিতিশীলতার দিকে আসতে পারা।

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক অবস্থার আরও উন্নতি হওয়া প্রয়োজন। পুলিশকে ঠিকভাবে অ্যাকটিভ না করা গেলে নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে। অনেকে ভাবছে নির্বাচন দিয়ে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। বিষয়টা আসলে তা নয়। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি তৈরি হওয়া প্রয়োজন। আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাই। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালের নির্বাচনকে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন ধরা হয়। আমরা তার থেকেও ভালো একটি নির্বাচন উপহার দিতে চাই।

সরকার এক বছর পূর্তিতে কী দেখতে চায়— জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি সবচেয়ে বড় অর্জন হতে পারে, যার জন্য সারাদেশের মানুষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন কাজে যাতে কোনো ঘাটতি না থাকে তা নিশ্চিত করতে চাই। আইন-শৃঙ্খলা ও দ্রব্যমূল্য স্বস্তির জায়গায় পৌঁছাক, সেই সঙ্গে সংস্কারের জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলো নিয়ে যাতে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয় সেটা চাই।

জাতির সামনে একটা সমঝোতার রূপরেখা দিতে চাই, যাতে সবাই বুঝতে পারে যে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এই কাজগুলো করলাম এবং আগামীতে যারা সরকারে আসবে তারা বাকি এই কাজগুলো করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আ.লীগের যারা অপরাধী নন, রাজনীতি করতে চাইলে তাদের দল ছাড়তে হবে: নাহিদ

আপডেট সময় : ১১:১৫:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আওয়ামী লীগের যারা দুর্নীতি বা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নন, তাদের রাজনীতি করার প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের যারা অপরাধী নন, রাজনীতি করতে চাইলে তাদেরকে আওয়ামী লীগ ও তাদের মতাদর্শ ত্যাগ করতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নামে, আওয়ামী লীগ মতাদর্শে কোনো রাজনীতি করার সুযোগ নেই। কারণ, তাদের মতাদর্শটা ফ্যাসিবাদী, যার ভিত্তিতে গত ১৫ বছরের রাজনীতি চলেছে, গণহত্যা হয়েছে। যারা ভুল বুঝতে পারবেন, তাদেরকে সেই আদর্শটাকে ত্যাগ করতে হবে। তাদের রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকারের তো কোনো সমস্যা নেই। অন্য দলে যোগ দিতে পারেন, নতুন দল গঠন করতে পারেন।

ইংরেজি গণমাধ্যম ডেইলি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা। সাক্ষাৎকারটি রোববার প্রকাশ হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে নাহিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আওয়ামী লীগের রাজনীতি চান না, কিন্তু আইসিটি আইন সংশোধনের সময় দলের বিচার করার সুযোগ রাখেননি কেন?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, তখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অংশীজনদের পরামর্শ নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উপদেষ্টা পরিষদের বিজ্ঞ সদস্যরা মতামত দিয়েছেন। এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, সেই দিকে বেশি নজর দিয়েছি আমরা। কারণ দল নিষিদ্ধ করতে আদালতের বাইরেও পথ আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আপাতত বিচার কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে আছি। বিচারের অগ্রগতি হলে এ সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও সহজ হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের গত ছয় মাসের কাজের মূল্যায়ন করতে গিয়ে নাহিদ বলেন, কিছু আক্ষেপের জায়গা রয়েছে, এটা ঠিক। গত ছয় মাসে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রত্যাশিত মাত্রায় উন্নতি করতে পারিনি। তবে পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমি মনে করি, সবচেয়ে বড় অর্জন হলো, অনিশ্চয়তা থেকে স্থিতিশীলতার দিকে আসতে পারা।

সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক অবস্থার আরও উন্নতি হওয়া প্রয়োজন। পুলিশকে ঠিকভাবে অ্যাকটিভ না করা গেলে নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হবে। অনেকে ভাবছে নির্বাচন দিয়ে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। বিষয়টা আসলে তা নয়। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি তৈরি হওয়া প্রয়োজন। আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাই। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালের নির্বাচনকে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন ধরা হয়। আমরা তার থেকেও ভালো একটি নির্বাচন উপহার দিতে চাই।

সরকার এক বছর পূর্তিতে কী দেখতে চায়— জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি সবচেয়ে বড় অর্জন হতে পারে, যার জন্য সারাদেশের মানুষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন কাজে যাতে কোনো ঘাটতি না থাকে তা নিশ্চিত করতে চাই। আইন-শৃঙ্খলা ও দ্রব্যমূল্য স্বস্তির জায়গায় পৌঁছাক, সেই সঙ্গে সংস্কারের জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলো নিয়ে যাতে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয় সেটা চাই।

জাতির সামনে একটা সমঝোতার রূপরেখা দিতে চাই, যাতে সবাই বুঝতে পারে যে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে এই কাজগুলো করলাম এবং আগামীতে যারা সরকারে আসবে তারা বাকি এই কাজগুলো করবে।