ঢাকা ১০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলুর বীজের দাবিতে ঢাকা বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৯:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৭ বার পড়া হয়েছে

আলুর চাষের ভরা মৌসুমে দ্বিগুন দামেও মিলছেনা আলুর বীজ। চাষিদের অভিযোগ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় বীজের ডিলারেরা সিন্ডকেট করে এই কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় এক ঘন্টাব্যাপী শেরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে ঢাকা বগুড়া মহসড়ক অবরোধ করে রাখেন শতাধিক কৃষক। পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর শেরপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য ৪ হাজার ৫০ মেট্রিকটন আলুর বীজ প্রয়োজন। উপজেলার ৯ জন ডিলারের মাধ্যমে নির্ধারিত পরিমাণে আলুর বীজ ৭৬ থেকে ৭৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা অবৈধ সিন্ডকেটের মাধ্যমে প্রায় ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। এরপরও বীজের অভাবে আলু চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে চাষীরা। তারা বিভিন্ন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিক খান ও কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা সুলতানার কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি। তাই তরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।

উপজেলার দক্ষিণ পেঁচুল গ্রামের সোহেল রানা বলেন, “আমি ৩০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করি। এবার বীজের সংকটের কারণে ১২ বিঘা জমি চাষ করেছি। কিন্তু বীজের অভাবে এখনও জমি পতিত আছে। ডিলারের কাছে গেলে বীজ পাওয়া যাচ্ছে না।

“ডিলারদের নির্ধারিত দোকানে বীজ পাওয়া না গেলেও গোপনে দ্বিগুন দামে বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। অনেকে ডিলারের চাহিদা অনুযায়ি অগ্রিম টাকা দিলেও তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর চেয়েও বেশি দামে অন্য উপজেলায় রাতের আঁধারে বীজ পাচার করা হচ্ছে। কৃষকেরা গত মঙ্গলবার রাতে ফিরোজ আলম নামে একজন ব্যবসায়ীর দুই ট্রাক বীজ আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উচরং গ্রামের সফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি ফিরোজ আলমের কাছে ৬শ কেজি আলুর বীজের অগ্রীম টাকা দিয়েও বীজ পাইনি। মঙ্গলবারে আটক করা বীজগুলি বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্রি করার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি দোকানে তালা মেরে পালিয়েছেন।

এবিষয়ে কয়েক জন ডিলারের সাথে যোগাযোগ করা হলে দোকান বন্ধ থাকায় কথা বলা যায়নি। মোবাইল চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সিন্ডকেটের কথা স্বীকার করেছেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান।

তিনি রূপালী বাংলাদেশ কে বলেন, “অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শুক্রবার ভ্রাম্যমান আদালতে একজন ব্যবসায়ীকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।“

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আলুর বীজের দাবিতে ঢাকা বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ

আপডেট সময় : ০৯:৫৯:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

আলুর চাষের ভরা মৌসুমে দ্বিগুন দামেও মিলছেনা আলুর বীজ। চাষিদের অভিযোগ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় বীজের ডিলারেরা সিন্ডকেট করে এই কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় এক ঘন্টাব্যাপী শেরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে ঢাকা বগুড়া মহসড়ক অবরোধ করে রাখেন শতাধিক কৃষক। পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর শেরপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য ৪ হাজার ৫০ মেট্রিকটন আলুর বীজ প্রয়োজন। উপজেলার ৯ জন ডিলারের মাধ্যমে নির্ধারিত পরিমাণে আলুর বীজ ৭৬ থেকে ৭৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা অবৈধ সিন্ডকেটের মাধ্যমে প্রায় ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। এরপরও বীজের অভাবে আলু চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে চাষীরা। তারা বিভিন্ন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিক খান ও কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা সুলতানার কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি। তাই তরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।

উপজেলার দক্ষিণ পেঁচুল গ্রামের সোহেল রানা বলেন, “আমি ৩০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করি। এবার বীজের সংকটের কারণে ১২ বিঘা জমি চাষ করেছি। কিন্তু বীজের অভাবে এখনও জমি পতিত আছে। ডিলারের কাছে গেলে বীজ পাওয়া যাচ্ছে না।

“ডিলারদের নির্ধারিত দোকানে বীজ পাওয়া না গেলেও গোপনে দ্বিগুন দামে বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। অনেকে ডিলারের চাহিদা অনুযায়ি অগ্রিম টাকা দিলেও তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর চেয়েও বেশি দামে অন্য উপজেলায় রাতের আঁধারে বীজ পাচার করা হচ্ছে। কৃষকেরা গত মঙ্গলবার রাতে ফিরোজ আলম নামে একজন ব্যবসায়ীর দুই ট্রাক বীজ আটক করে প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উচরং গ্রামের সফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি ফিরোজ আলমের কাছে ৬শ কেজি আলুর বীজের অগ্রীম টাকা দিয়েও বীজ পাইনি। মঙ্গলবারে আটক করা বীজগুলি বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্রি করার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি দোকানে তালা মেরে পালিয়েছেন।

এবিষয়ে কয়েক জন ডিলারের সাথে যোগাযোগ করা হলে দোকান বন্ধ থাকায় কথা বলা যায়নি। মোবাইল চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সিন্ডকেটের কথা স্বীকার করেছেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান।

তিনি রূপালী বাংলাদেশ কে বলেন, “অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শুক্রবার ভ্রাম্যমান আদালতে একজন ব্যবসায়ীকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।“