ঢাকা ০২:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ বিএসএফের বুমরাহ-শামিকে নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা ভারতের ১৯ দফায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন জিয়াউর রহমান: তারেক রহমান সংস্কার দরকার, তবে দ্রুত নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে: ফখরুল গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ১৫০ কোটি টাকা অনুদান শরীফ উদ্দিনের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা কর্মিরা পুর্ণঃউদ্যেমে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ শুনানি রোববার উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের চেষ্টা হচ্ছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৪৭ বাংলাদেশি

অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা ৩৮ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১০:১৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩ ৯৯ বার পড়া হয়েছে

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার থাকা প্রধানমন্ত্রীদের একজন কম্বোডিয়ার হুন সেন। সম্প্রতি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় এসেছেন তিনি। এতদিন পর অবশেষে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ছেলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করছেন তিনি।

৭০ বছর বয়সি হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়া শাসন করছেন। এই দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসন চালান। এর জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়েছেন। খবর বিবিসির

তিনি ২০২০ সালে প্রথম তার বড় ছেলে হুন মানেটের কাছে ক্ষমতা পরিবর্তনের পতাকা তুলেছিলেন। তবে বুধবার পর্যন্ত, পর্যবেক্ষকরা নিশ্চিত ছিলেন না যে ঠিক কখন এই ক্ষমতা হস্তান্তর হবে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি বিশেষ সম্প্রচারে হুন সেন বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাব না’। তিনি বলেন যে, তার পদে থাকা রাষ্ট্রে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে, এজন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

হুন সেনের ছেলে হুন ম্যানেট কম্বোডিয়ান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশটির ক্ষমতা নেওয়ার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন।

বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, হুন সেনের ছেলে হুন ম্যানেট (পড়ালেখা করেছেন পশ্চিমা দেশে) ক্ষমতা নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। হান ম্যানলেট হুন সেনের তিন ছেলের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তিনি কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর প্রধান।

হুন সেনের অন্য দুই ছেলেও পার্টি ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তবে হুন সেনের ছেলে ক্ষমতায় আসলে যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তা মনে করেন না অনেক বিশেষজ্ঞ।

অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরশাসক বিশেষজ্ঞ লি মরগেনবেসার বলছিলেন, ‘কোনো গাছের ফল সেই গাছ থেকে খুব একটা দূরে গিয়ে পড়ে না। পরিবারতন্ত্রের অন্যান্য উদাহরণ পর্যালোচনা করলে আমরা সেরকমই দেখতে পাই। আর হুন সেন যে কবে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবেন, সে বিষয়েই আসলে কারো ধারণা নেই।’

কে এই হুন সেন
হুন সেনের জন্ম ১৯৫২ সালে এক কৃষক পরিবারে। নমপেনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছে শিক্ষা লাভ করেন তিনি। ষাটের দশকের শেষ দিকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। সে সময় এক বন্দুকযুদ্ধে তিনি তার বাম চোখ হারান।

সত্তরের দশকের শেষদিকে পল পটের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনামলে হান সেন খেমার রুজের একজন কমান্ডার ছিলেন। খেমার রুজের শাসনামলে কম্বোডিয়ায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ মারা যায়। ১৯৭৭ সালে তিনি ভিয়েতনামে পালিয়ে যান এবং খেমার রুজের বিরোধী সেনাদের সাথে যোগ দেন।

কম্বোডিয়ায় ১৯৭৯ সালে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করে ভিয়েতনাম। তখন তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দেশে ফেরত যান। পরে ১৯৮৫ সালে ৩৩ বছর বয়সে তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন।

১৯৯৩ সালের নির্বাচনে হুন সেন হেরে গেলেও পরাজয় মানতে অস্বীকার করেন। পরে ফুচিনচেপ পার্টির প্রিন্স নরোদম রানারিধের সাথে সমঝোতা করে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেন। এরপর ১৯৯৭ সালে রক্তক্ষয়ী এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের ক্ষমতা দখল করেন এবং প্রিন্স রানারিধকে সাময়িকভাবে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা ৩৮ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট সময় : ১০:১৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতার থাকা প্রধানমন্ত্রীদের একজন কম্বোডিয়ার হুন সেন। সম্প্রতি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় এসেছেন তিনি। এতদিন পর অবশেষে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ছেলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করছেন তিনি।

৭০ বছর বয়সি হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে কম্বোডিয়া শাসন করছেন। এই দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসন চালান। এর জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়েছেন। খবর বিবিসির

তিনি ২০২০ সালে প্রথম তার বড় ছেলে হুন মানেটের কাছে ক্ষমতা পরিবর্তনের পতাকা তুলেছিলেন। তবে বুধবার পর্যন্ত, পর্যবেক্ষকরা নিশ্চিত ছিলেন না যে ঠিক কখন এই ক্ষমতা হস্তান্তর হবে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি বিশেষ সম্প্রচারে হুন সেন বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাব না’। তিনি বলেন যে, তার পদে থাকা রাষ্ট্রে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে, এজন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

হুন সেনের ছেলে হুন ম্যানেট কম্বোডিয়ান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশটির ক্ষমতা নেওয়ার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন।

বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, হুন সেনের ছেলে হুন ম্যানেট (পড়ালেখা করেছেন পশ্চিমা দেশে) ক্ষমতা নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। হান ম্যানলেট হুন সেনের তিন ছেলের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তিনি কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর প্রধান।

হুন সেনের অন্য দুই ছেলেও পার্টি ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তবে হুন সেনের ছেলে ক্ষমতায় আসলে যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তা মনে করেন না অনেক বিশেষজ্ঞ।

অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরশাসক বিশেষজ্ঞ লি মরগেনবেসার বলছিলেন, ‘কোনো গাছের ফল সেই গাছ থেকে খুব একটা দূরে গিয়ে পড়ে না। পরিবারতন্ত্রের অন্যান্য উদাহরণ পর্যালোচনা করলে আমরা সেরকমই দেখতে পাই। আর হুন সেন যে কবে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবেন, সে বিষয়েই আসলে কারো ধারণা নেই।’

কে এই হুন সেন
হুন সেনের জন্ম ১৯৫২ সালে এক কৃষক পরিবারে। নমপেনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছে শিক্ষা লাভ করেন তিনি। ষাটের দশকের শেষ দিকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। সে সময় এক বন্দুকযুদ্ধে তিনি তার বাম চোখ হারান।

সত্তরের দশকের শেষদিকে পল পটের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনামলে হান সেন খেমার রুজের একজন কমান্ডার ছিলেন। খেমার রুজের শাসনামলে কম্বোডিয়ায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ মারা যায়। ১৯৭৭ সালে তিনি ভিয়েতনামে পালিয়ে যান এবং খেমার রুজের বিরোধী সেনাদের সাথে যোগ দেন।

কম্বোডিয়ায় ১৯৭৯ সালে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করে ভিয়েতনাম। তখন তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দেশে ফেরত যান। পরে ১৯৮৫ সালে ৩৩ বছর বয়সে তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন।

১৯৯৩ সালের নির্বাচনে হুন সেন হেরে গেলেও পরাজয় মানতে অস্বীকার করেন। পরে ফুচিনচেপ পার্টির প্রিন্স নরোদম রানারিধের সাথে সমঝোতা করে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেন। এরপর ১৯৯৭ সালে রক্তক্ষয়ী এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের ক্ষমতা দখল করেন এবং প্রিন্স রানারিধকে সাময়িকভাবে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন।