ঢাকা ১১:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

অনশন প্রত্যাহার জবি শিক্ষার্থীদের, শাটডাউন চলবে বুধবার পর্যন্ত

দেশের আওয়াজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:২৭:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে

মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা ৩৫ ঘন্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় সংবাদ সম্মেলনে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একে এম রাকিব।

এর আগে বিকাল ৪টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। বেলা পৌনে পাঁচটার দিকে সচিবালয়ের সামনে এসে পৌঁছান।

এ সময় অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইনের স্ট্যান্ডসহ রিক্সায় চেপে পদযাত্রা অংশ গ্রহণ করেন। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে একেএম রাকিব বলেন, আগামী বুধবার যে মিটিং হবে সেখানে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর চুক্তি সাক্ষর হবে; এ মর্মে লিখিত অঙ্গিকার পেয়েছি।

এছাড়া বাণী ভবন ও ডা. হাবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী স্টিল বেজড ভবনের নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে যাচাই ও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফলে আমরা আমাদের অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।

যেহেতু তারা তিনটি দাবির দুইটি মেনে নিয়েছেন এবং একটি যাচাই করে দেখবেন, সেহেতু আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে বুধবারের মিটিংয়ের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাট ডাউন থাকবে।

এর আগে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান, একশন টু একশন, ডাইরেক্ট একশন, আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম, লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি, অনশন অনশন চলছে চলবে, কবে দিবা ক্যাম্পাস, প্রশাসন কি করে, আমার ভাই অনশনে নানা স্লোগান দেন।

এর আগে দুপুর ২টায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। সচিবালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এই চিঠিতে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়।

এ চিঠি আসার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাল্টা ৩টি দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো- সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে সাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সকলের সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘ সূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে; যতদিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে এদিন সকাল থেকে পুরো ক্যাম্পাস শাট ডাউন ও টানা দ্বিতীয় দিনের মত অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, শহিদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে (সাবেক বিবিএ ভবন), রফিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। শাট ডাউন কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্বিবদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও দপ্তরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কোনো বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, আমাদের সন্তানেরা জীবনের বাজি রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, আবাসনের জন্য অনশনে ছিল। আশা করছি, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরও সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। মিটিংয়ে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে । তারপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমরা বিবিধের সেক্টরে আমাদের দাবির অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

উল্লেখ্য, এর আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অনশন করে শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উপাচার্যের বারবার অনুরোধেও অনশন ভাঙেনি শিক্ষার্থীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

অনশন প্রত্যাহার জবি শিক্ষার্থীদের, শাটডাউন চলবে বুধবার পর্যন্ত

আপডেট সময় : ১১:২৭:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা ৩৫ ঘন্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় সংবাদ সম্মেলনে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একে এম রাকিব।

এর আগে বিকাল ৪টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন তারা। বেলা পৌনে পাঁচটার দিকে সচিবালয়ের সামনে এসে পৌঁছান।

এ সময় অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইনের স্ট্যান্ডসহ রিক্সায় চেপে পদযাত্রা অংশ গ্রহণ করেন। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে একেএম রাকিব বলেন, আগামী বুধবার যে মিটিং হবে সেখানে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর চুক্তি সাক্ষর হবে; এ মর্মে লিখিত অঙ্গিকার পেয়েছি।

এছাড়া বাণী ভবন ও ডা. হাবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী স্টিল বেজড ভবনের নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে যাচাই ও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফলে আমরা আমাদের অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।

যেহেতু তারা তিনটি দাবির দুইটি মেনে নিয়েছেন এবং একটি যাচাই করে দেখবেন, সেহেতু আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে বুধবারের মিটিংয়ের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাট ডাউন থাকবে।

এর আগে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা বিপ্লবে বলীয়ান, নির্ভীক জবিয়ান, একশন টু একশন, ডাইরেক্ট একশন, আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম, লজ্জা লজ্জা, ইউজিসি ইউজিসি, অনশন অনশন চলছে চলবে, কবে দিবা ক্যাম্পাস, প্রশাসন কি করে, আমার ভাই অনশনে নানা স্লোগান দেন।

এর আগে দুপুর ২টায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। সচিবালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। এই চিঠিতে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়।

এ চিঠি আসার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাল্টা ৩টি দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো- সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে সাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সকলের সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘ সূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না; পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে; যতদিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে এদিন সকাল থেকে পুরো ক্যাম্পাস শাট ডাউন ও টানা দ্বিতীয় দিনের মত অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, শহিদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে (সাবেক বিবিএ ভবন), রফিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। শাট ডাউন কর্মসূচির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্বিবদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও দপ্তরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কোনো বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, আমাদের সন্তানেরা জীবনের বাজি রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, আবাসনের জন্য অনশনে ছিল। আশা করছি, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ ত্বরান্বিত হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলেই আমাদের এই কার্যক্রম আরও সহজ ও ত্বরান্বিত হয়েছে। আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। মিটিংয়ে প্রকল্পের অবস্থাও বিশ্লেষণ করা হবে । তারপর একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সভায় আমরা বিবিধের সেক্টরে আমাদের দাবির অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

উল্লেখ্য, এর আগে রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অনশন করে শিক্ষার্থীরা। অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উপাচার্যের বারবার অনুরোধেও অনশন ভাঙেনি শিক্ষার্থীরা।